ভুবনেশ্বরের কথা’-য় শৈবক্ষেত্র ভুবনেশ্বরের ইতিহাস খুঁজতে গিয়ে লেখক পৌঁছে গিয়েছেন লিঙ্গ-রূপধারী এবং মানবদেহধারী শিবমূর্তির উৎসের দিকে। আবার শিব-দুর্গার প্রসঙ্গে আলোচনা করেছেন প্রাচীন সিরিয়ার মুদ্রায় দেখা যাওয়া বৃষারোহী দেব এবং সিংহবাহিনী দেবীর কথা। নির্মাণকালের প্রেক্ষাপটে ভুবনেশ্বরের মন্দিরের স্থাপত্য ও স্থানীয় শৈলী বিষয়ে একটি আলাদা অধ্যায় আছে এই বইতে। এছাড়াও এই অঞ্চলে প্রাপ্ত কয়েকটি শিলালিপি, উৎকলের কেশরী বংশ, সাঁচি ও ওড়িশার ভাস্কর্যে শিল্পধারার সাদৃশ্য প্রভৃতির সঙ্গে প্রসঙ্গক্রমে নেপালের গণেশ মন্দির বিষয়েও আলোচনা করেছেন শ্রীসরকার। ভুবনেশ্বরের কথায় নেপাল প্রসঙ্গ এসেছে গণেশ মূর্তির উপাসনার প্রাচীনত্ব খুঁজতে গিয়ে।
শিল্পকলার ইতিহাসের চর্চায় গুরুদাস সরকারের অবদান নিয়ে বলা নিষ্প্রয়োজন। তা সত্ত্বেও মন্দিরের কথার ভূমিকার রচয়িতার নামটি একবার উল্লেখ
করতেই হয়। কারণ, সেই নামটি অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর। ‘কোনারকের কথা’ এবং ‘ভুবনেশ্বরের কথা’ আলাদা বই রূপে প্রকাশিত হওয়ায় দু'টি বইতেই সেই ভূমিকা এবং ‘মন্দিরের কথা'-র উপক্রমণিকা অংশটি সংযুক্ত করেছেন প্রকাশক। বর্তমান সংস্করণগুলির জন্য আলাদা করে নতুন ভূমিকাও যোগ করা হয়েছে .
১৯১৭ নাগাদ ভুবনেশ্বরের প্রধান দ্রষ্টব্য ছিল লিঙ্গরাজ মন্দির। এখনকার মতো প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ বা মন্দিরের পরিচালন সমিতির বিধিনিষেধ সেই সময় ছিল না। তাই গুরুদাসবাবুরা যেভাবে মন্দিরের স্থাপত্য আর ভাস্কর্যগুলি দেখার সুযোগ পেয়েছিলেন, এখনকার দর্শক বা বছর বিশ-ত্রিশ আগেকার যাত্রী সেই সুযোগ পাননি। সোজা কথায় বলতে গেলে, দেখার মতো যে জিনিসগুলি এখনকার মানুষের কাছে থেকেও নেই, সেগুলি দেখার দুধের স্বাদ ঘোলে মেটানোর জন্য এখন ভরসা ওই যুগের লেখকদের বর্ণনা। ফলে গুরুদাসবাবুর লেখা বইটি একশোর বেশি বছরের পুরনো হলেও একশো বছর আগে দেখা একটি শহর, সেখানকার শিল্প, স্থাপত্য, ভাস্কর্য, ধর্ম, ইতিহাস প্রভৃতির বর্ণনা এখনও প্রাসঙ্গিক।
BHUBANESWARER KATHA | ভুবনেশ্বরের কথা
Type of Product Physical Authors Gurudas Sarkar Publisher list Khori Prakashani Languages Bengali Binding Hardbound Publishing Year 2022